জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা ১৮ মিনিটে ‘Mahmud Suvo’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে তিনি একটি পোস্ট দেন। পোস্টে তিনি লেখেন-“তারা
বলছে রাষ্ট্র দিল্লি, পিন্ডি কিংবা লন্ডন থেকে পরিচালিত হবে না। কিন্তু
রাষ্ট্র গত ৫৪ বছর থেকে দিল্লি চালাচ্ছে। আগামীকাল বিজয় দিবস। তথাকথিত
দেশপ্রেমিক চোর, বাটপারদের বিজয় দিবস।”
পোস্টটি সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা দ্রুত ভাইরাল হয় এবং বিভিন্ন মহলে তীব্র
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বিতর্ক আরও উসকে দেয়, যখন ওই পোস্টের সঙ্গে
সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত শরীফ ওসমান হাদী, শহীদ আবরার ফাহাদ এবং ভারতীয়
সীমান্তে নিহত কিশোরী ফেলানীর মরদেহের ছবি যুক্ত করা হয়।
ঘটনাটির
তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রদল নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখার সাবেক
সভাপতি আকবর হোসেন। তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী
দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নিয়ে এ ধরনের শব্দচয়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
জানাই। এই পোস্টের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে
বলে আমরা মনে করি। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে বড় নয়। বিজয় দিবস নিয়ে এমন বক্তব্য
কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নোয়াখালী
সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সোহাগ। তিনি বলেন, একদিকে তার
দলের নায়েবে আমির অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
করছেন, অন্যদিকে একই সংগঠনের একজন দায়িত্বশীল নেতা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও
বিজয় দিবস নিয়ে কটাক্ষমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, যা চরম দ্বিচারিতা ও
দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে মাহমুদ শুভ প্রকাশ্যে ক্ষমা না
চাইলে নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে তাকে ও তার সংগঠনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে
উপযুক্ত কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব।
এদিকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে
আজ ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে ফেসবুক থেকে বিতর্কিত পোস্টটি সরিয়ে নেন নাজিম
মাহমুদ শুভ। এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৭১ আমাদের
কাছে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। যারা একাত্তরকে পুঁজি করে চুরি,
বাটপারি ও ভারতের গোলামি করে বেড়ায়, তাদের বিরুদ্ধেই আমি পোস্ট
দিয়েছিলাম। এরপরও যারা এতে মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছেন, তাদের কাছে আমি
ক্ষমাপ্রার্থী।
ঘটনাটি নিয়ে নোয়াখালীর রাজনৈতিক ও শিক্ষাঙ্গনে এখনো আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।