নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও হাতিয়ার মাছ ব্যবসায়ী আবু বক্কর
সিদ্দিক মিজান মাঝিকে নিজ বাড়ি থেকে হাত-পা, চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে মিথ্যা
মামলায় ফাঁসানোর প্রতিবাদে এবং তাঁ নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও
বিক্ষোভ করেছে ব্যবসায়ীরা।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে জেলার চেয়ারম্যান ঘাট এলাকার
মাছ ঘাটে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ও
জেলেরা। এর আগে বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) দিবাগত গভীর রাতে আবু বক্কর সিদ্দিক
মিজান মাঝিকে তাঁর নিজ বসত ঘর থেকে কোস্ট গার্ডের সদস্যরা তুলে নেয় বলে
নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
মিজান মাঝি সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও একজন বড় মৎস্য ব্যবসয়ী।
মানববন্ধনে
স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘাটের ব্যবসায়ী মাহবুবুল আলম ইউসূফ, ফখরুল মাঝি,
ব্যবসায়ী আকবর হোসেন, আনোয়ার হোসেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়ন
যুবদলের সভাপতি মাঈন উদ্দিন, সৈকত ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সফিকুল
ইসলাম পলাশ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এসময়
বক্তারা বলেন, আবু বক্কর সিদ্দিক মিজান মাঝি বিএনপির রাজনৈতিক নেতার
পাশাপাশি সুবর্ণচর ও হাতিয়া অঞ্চলের একজন বড় সফল ও সৎ মৎস্য ব্যবসায়ী। এই
অঞ্চলের মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে তাঁর
যথেষ্ট দান-অনুদান রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোন ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামা অথবা
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কোন অভিযোগ নেই। থানায় কোন মামলা নেই। অথচ গত
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৩টায় মিজান মাঝি ঘরের দরজা ভেঙে ঘরের আসবাবপত্র
ভাঙচুর ও লুটপাট করে তাঁকে হাত-পা, চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায় কোস্টগার্ডের
সদস্যরা। পরে শুক্রবার দুপুরে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে তাঁকে হাতিয়ার
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কিছু অস্ত্র দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। অবিলম্বে
আবু বক্কর সিদ্দিক মিজান মাঝির নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও
জেলেরা।
মিজান মাঝির ছেলে
শাহাদাত হোসেন রুবেল বলেন, তাঁর বাবা চরবাটা ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ইতিপূর্বে তারঁ বাবার বিরুদ্ধে চরজব্বর থানা অথবা
অন্য কোথাও কোন মামলা বা অভিযোগ নেই। অথচ রাজনীতি ও ব্যবসায়িক কারণে তাঁর
বাবার বিরুদ্ধে কিছু লোক শত্রুতা করে কোস্টগার্ডকে দিয়ে তাঁর বাবাকে তুলে
নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসান।
তিনি
বলেন, তাঁর বাবা মিজান মাঝিকে বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় নিয়ে গেলেও শুক্রবার
দুপুর পর্যন্ত থানায় হস্তান্তর না করে অস্ত্র উদ্ধারের নামে মিথ্যা অস্ত্র
মামলায় জড়ান। তাঁর বাবার মুক্তির দাবিতে মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে
চাইলে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ করে তা প্রতিহত করার চেষ্টা করা
হয়। তার পরও মৎস্য ব্যবসায় ও সাধারণ মানুষ তাঁর বাবার মুক্তির দাবিতে
মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। পরিবারের পক্ষ থেকেও তাঁরা
অভিলম্বে মিজান মাঝির নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
এদিকে,
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকতা লেঃ কমান্ডার বিএন মো. সিয়াম-উল-হক এক
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরপে মিজান ডাকাতকে আটকের পর
হাতিযার বাংলা বাজার তার মাছের আড়তে অভিযান চালিয়ে ৯টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র,
২ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, ১ রাউন্ড ফাঁকা কার্তুজ ও ৩টি দেশীয় অস্ত্র এবং
২৯টি হাত বোমা জব্দ করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়ায় মামলা করা
হয়েছে।