শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে নোয়াখালীতে প্রস্তুত হয়েছে ১৮৭টি পূজা মন্ডপ। তবে প্রতিমা শিল্পীদের লোকসান, আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও, প্রশাসন বলছে পূজা হবে আনন্দঘন ও নিরাপদ পরিবেশে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শারদীয় দুর্গা পূজা ঘিরে সাজ সাজ রব নোয়াখালীর পূজা মন্ডপগুলোতে। জেলার ১৮৭টি মন্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। প্রতিমার রঙের তুলিতে প্রাণ পাচ্ছে দুর্গা মায়ের মূর্তি। তবে প্রতিমা শিল্পীরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে এই কাজ করলেও এবার খরচের তুলনায় আয় কম, ফলে লোকসানে পড়েছেন তারা।
প্রতিমা শিল্পী বলছেন, “এবার মাটির দাম, রঙের দাম- সব কিছুই বেশি। আগের মতো অর্ডারও পাই নাই, এতে লোকসানে পড়েতেছি। তাও মায়ের জন্য করছি।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কিছুটা শঙ্কা প্রকাশ করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। তারা বলছেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে নির্বিঘেœ পূজা উদ্যাপন করতে পারবো কিনা, তাতে আমরা অনেকটা শঙ্কিত। ২০২১ সালে চৌমুহনীতে কয়েকটি পূজা মন্ডপে এবং মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো আমরা উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছি। আনন্দঘন ও নিরাপদে পূজা উদ্যাপন করতে প্রশাসনের কাছে জোর নিরাপত্তার দাবি করেন জেলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
পূজা মন্ডপ দেখতে আসা দর্শনার্থী বলেন, আমরা এসেছি মূলত, মাকে দেখার জন্য, মায়ের যে আগমনী বার্তা, তা আমাদের মাঝে আনন্দ জাগিয়ে তোলেছে। মায়ের আগমন মানেই আনন্দ। মায়ের আগমনে চাই শুধু নিরাপদ পরিবেশ। এবার অনেক সুন্দর মন্ডপ হয়েছে। বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি, খুব ভালোই লাগছে। ভালোই ভাবে পূজা শেষ করতে পারলেই পূর্ণ স্বার্থকতা পাবো।
আনন্দঘন ও নিরাপদে পূজা উদ্যাপন করতে প্রশাসনের সঙ্গে একাধিকবার মতবিনিময় ও বৈঠকেরে কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্ট নোয়াখালীর আহবায়ক রনি কুমার দাস। তিনি বলেন, নির্বিঘেœ পূজা শেষ করতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সভা-মতবিনিময় করেছি এবং প্রতিটি মন্ডপে গিয়ে সহযোগিতা দিয়েছি। আশা করছি এবার নির্বিঘেœ পূজা উদ্যাপন হবে।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানিয়েছেন, কোথাও কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। আমরা প্রতিটি মন্ডপে নজর রাখছি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যেন পূজা হয়, সে ব্যবস্থাই নিয়েছি এবং আনন্দঘন ও নিরাপদ পরিবেশে পূজা করতে ১৮৭টি মন্ডপের জন্য ৯৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, নোয়াখালীর প্রতিটি পূজা মন্ডপেই এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। নিরাপত্তা ও উৎসবের আবহে দুর্গা পূজা যেন হয়ে ওঠে সার্বজনীন আনন্দের উৎসব, সেটাই এখন প্রত্যাশা সবার।